চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আশা করছি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারব। ’
জানা যায়, চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট, কল্যাণ পার্টিসহ বিভিন্ন দল-স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ১২৫ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। চট্টগ্রামে ভোট কেন্দ্র ২ হাজার ২৩টি এবং ভোটকক্ষ ১৩ হাজার ৭৩২টি। ভোট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৪৭ হাজার ৫৪৪ জন।
ছয় আসনে লড়াই হবে নৌকা-স্বতন্ত্র : ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ছয়টি আসনে লড়াই হবে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)-এ আওয়ামী লীগের মাহবুব উর রহমান রুহেলের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীনের। তবে এলাকায় রাজনৈতিক অবস্থান ও পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে এগিয়ে থাকবেন রুহেল। চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ)-এ নৌকার মাঝি মাহফুজুল রহমান মিতার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে স্বতন্ত্র জামাল উদ্দিন চৌধুরীর। এ আসনে দুজনেরই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা সমান। চট্টগ্রাম-১০-এ নৌকার মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে লড়াই হবে সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র মোহাম্মদ মনজুর আলমের। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর)-এ নৌকার এম এ লতিফের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র জিয়াউল হক সুমনের। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া)-এ আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী যোজন এগিয়ে থাকবেন বিতর্কিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর চেয়ে। চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া)-এ নৌকার আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিনের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র আবদুল মোতালেবের।
পাঁচ আসনে লড়াই হবে ত্রিমুখী : চট্টগ্রামের পাঁচ আসনে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার আভাস মিলেছে। এগুলোয় ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোকে প্রশাসন অধিক ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রেখেছে। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি)-এ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র হোসাইন মো. আবু তৈয়ব ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারীর। শেষ পর্যন্ত পাল্লা ভারী হওয়ার সম্ভাবনা সনির। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)-এ জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন প্রকাশ ভিপি নাজিম এবং স্বতন্ত্র মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরীর লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। তবে বিগত তিনটি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া ব্যারিস্টার আনিসের পাল্লা হবে ভারী। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী)-এ জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র আবদুচ ছালাম ও বিজয় কুমার চৌধুরীর। এ আসনে তিনজনেরই বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা সমান। চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ)-এ নৌকার নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদের সঙ্গে লড়াই হবে মোহাম্মদ আবদুল জব্বর চৌধুরীর। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে নৌকার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র মুজিবুর রহমান ও আবদুল্লাহ কবির লিটনের।
নির্ভার পাঁচ আসনের নৌকার প্রার্থী : জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্ভার রয়েছেন চট্টগ্রামের পাঁচ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। এর প্রতিটিতে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে একাধিক প্রার্থী থাকলেও শক্তি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কেউ নেই। তাই এ আসনগুলোয় নৌকার বিজয় এক প্রকার সুনিশ্চিত। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড)-এ এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের এস এম আল মামুন। চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান)-এ এ বি এম ফজলে করিম। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া)-এ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি)-এ মহিবুল হাসান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা)-এ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
0 coment rios: