আল্লাহ
কেন মানুষ কে বিপদে ফেলে?
আল্লাহ কেন
মানুষকে বিপদে ফেলেন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমাদের কুরআন ও হাদীসে দেওয়া
ব্যাখ্যার দিকে তাকাতে হবে। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বিপদ ও কষ্টগুলিকে জীবনের
অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখা হয়, এবং এগুলি মানুষের আত্মশুদ্ধি ও উন্নতির জন্য
পরীক্ষা হিসাবে বিবেচিত হয়।
কোরআন ও
হাদিসের দৃষ্টিকোণ
পরীক্ষা
ও নিরীক্ষা: কুরআনে আল্লাহ বারবার বলেছেন যে তিনি মানুষকে পরীক্ষা করবেন। এই
পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের ধৈর্য, ঈমান, এবং
তাকে মেনে চলার ক্ষমতা যাচাই করেন। কুরআন বলে:
"আমি
অবশ্যই তোমাদেরকে কিছুটা ভয়, ক্ষুধা এবং সম্পদ, জীবন ও ফল-ফলাদির ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। আর তুমি ধৈর্যশীলদের
সুসংবাদ দাও।" (সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)
আত্মশুদ্ধি
ও পাপমুক্তি: হাদিসে বলা হয়েছে যে বিপদ ও কষ্ট মানুষকে তার পাপ থেকে
শুদ্ধ করে এবং তাকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে। এটি মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য
প্রয়োজনীয়। একটি হাদিসে নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
"মুসলমানের
যেকোনো কষ্ট, দুশ্চিন্তা, দুঃখ,
বিপদ বা দুর্দশা হলে, আল্লাহ তার পাপের
কিছু অংশ ক্ষমা করে দেন।" (সহিহ বোখারি)
আল্লাহর
উপর নির্ভরশীলতা: বিপদ ও কষ্টের সময়ে মানুষ আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হয়ে
ওঠে এবং তার কাছাকাছি আসে। এতে মানুষের আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ে।
কুরআনে বলা হয়েছে:
"যখন
মানুষকে কষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে শুয়ে, বসে বা দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকে; কিন্তু যখন আমি
তার কাছ থেকে সেই কষ্ট অপসারণ করি, তখন সে এমন চলে যায়
যেন কখনোই আমাকে তার কষ্টের জন্য ডাকে নি।" (সূরা ইউনুস, আয়াত ১২)
ধৈর্যের
গুরুত্ব: কুরআন ও হাদিসে ধৈর্য ধারণের গুরুত্ব ব্যাপকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিপদ ও কষ্টের সময় ধৈর্য ধরাই হলো প্রকৃত ঈমানের পরিচয়। কুরআন বলে:
"হে
মুমিনগণ, ধৈর্য ধারণ কর এবং ধৈর্য ধরতে পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ
করো।" (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ২০০)
উপসংহার
আল্লাহ কেন
মানুষকে বিপদে ফেলেন,
এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এটি পরীক্ষার মাধ্যম হিসেবে,
আত্মশুদ্ধি ও পাপমুক্তির উপায় হিসেবে এবং আল্লাহর প্রতি
নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করতে হয়। কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা দেখতে পাই যে বিপদ ও
কষ্ট মানব জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও ঈমানের উন্নতির জন্য অপরিহার্য
0 coment rios: