রবিবার, সেপ্টেম্বর ১

বাস্তব গল্প- ফরিদুল ইসলাম সূর্য -NB Article

 



ছোট গল্প


প্রায় প্রতিদিনই ফজরের নামাজ শেষ করে একজন শ্রদ্ধাভাজন দাদা (বাবার চাচা) আমাদের বাড়ির সামনে এসে কখনো বাকি মুছল্লিদের সাথে কখনো আমাদের সাথে ইয়ারকি/মজা ও গল্প করতো।

আসলে গ্রামের বয়স্ক লোকেরা এমনি হয়।


এরকম ভাবেই কোনো একদিন তিনি একটা গল্প আমাদের শুনিয়েছিলেন, সেই গল্পটাই আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

তিনি বলতে শুরু করলেনঃ একজন দোকানদার ছিলেন, তিনি একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে বাড়ির পেছনে থাকা ছোট ঘরে গেলেন ( অর্থাৎ পায়খানায়) । তিনি সেখানে গিয়ে তিনি কাজ সারছেন এবং দোকানের বাকির হিসাব মিলাচ্ছেন। "ওমুকয়ের বউয়ের কাছে ১০ টাকা পাবো । তমুকে ৫ টাকার বিড়ি নিয়েছে এখনো টাকা দেয় নাই।" এরকম ভাবে দোকানের সব হিসাব মিলাতে মিলাতে, সে যেটার উপর বসে ছিলো(সেনেটারি) সেটা যে অনেক পুরনো তা সে খেয়াল করেনি। তার সেই হিসাব নিকাশ প্রায় শেষের দিকেই চলে এসেছে। এমন্তাবস্থায় সে ভেঙ্গে পায়খানার গর্তে পড়ে যায়।


আর পায়খানার গর্তও ছিলো মোটামুটি বেশ লম্বা, পায়খানায় পড়ে গিয়ে কয়েকটা চুবানিও খেয়েছে কিন্তু উঠতে পারে নাই। আর লজ্জায় কাউকে ডাকতেও পারছিলো না । কিন্তু বেচারার জীবন তো বাঁচাতে হবে? এমন দুর্গন্ধে আর কতক্ষণ? অনেক ভেবে চিনতে এবার একটু ডাকাডাকি করতে শুরু করলো "কে আছো আমাকে বাঁচাও!"


ঠিক ঐ সময়ে বাড়ির পাশ দিয়ে একটা ছেলে কোথাও যাচ্ছিলো আর ছেলেটার সর্দি ছিলো, গোংরানো গলার সেই ডাক ঐ ছেলেটা শুনতে পায় "কে আছো আমাকে বাঁচাও!" কিন্তু আওয়াজ কোথা থেকে আসছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। একটু খোঁজাখুজি করার পরে সে দেখতে পায় দোকানদার পায়খানায় গলা অব্ধি ডুবে আছে।

ছেলেটা দোকানদারকে হাত বারিয়ে দিয়ে ডেকে বললো "চাচা আপনার হাতটা দেন।" পায়খানায় ডুবে থাকা দোকানদার উপরের দিকে তাকিয়ে দেখে ছেলেটার নাক থেকে সিগন দেখা যাচ্ছে। দোকানদার হাত না বারিয়ে দিয়ে উলটা ছেলেটাকে বলছে " ছিঃ তোর নাকে সিগন, তুই যা এখান থেকে। ওয়াক থুঃ"। এ তুই এতো গাদর কেন?


ঠিক এই গল্পে থাকা দোকানদারের আমাদের সমাজে অভাব নেই। এমনও অনেক মানুষ আছে যারা ঘরে পায়না ভাতের নাগাল বাইরে দেখায় কোটিপতির ভাব। নিজের বাড়িতে নেই ঘরের চাল অন্যের বাড়িতে কি আছে নেই তা নিয়ে সমালোচনা করে। এদের মুর্খতা দেখলে অবাক ও হই আবার হাসিও পায়।


সব শেষে এটাই বলতে চাই, এদের থেকে দূরে থাকবেন।


-ফরিদুল ইসলাম সূর্য


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: